দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় ভোরবেলা রাজধানী সিউলে ইউনের ব্যক্তিগত বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সিউলের পাহাড়ি এলকার ওই বাসভবনে বসবাস করছিলেন ইউন। বাড়িটির চারদিক কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল এবং তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বাড়ির বাইরে ছিল সশস্ত্র বাহিনীর একটি ছোট দল।
মঙ্গলবার (১৪জানুয়ারি) রাতে ৩০০ পুলিশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দুর্নীতি দমন সংস্থার তদন্তকারীদের একটি দল ইউনের বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেয়। তারপর ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করে মূল শহর অভিমুখে রওনা হয়।
তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় ইউনের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই গ্রেপ্তার অবৈধ এবং ইউনকে জনসমক্ষে হেয় করার জন্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে ইউন সুক ইয়োলই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি অভিশংসন ও গ্রেপ্তার পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইউনের বাড়ির আশেপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দুর্নীতি দমন সংস্থার কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন— এ খবর প্রচারিত হওয়া পর মঙ্গলবার রাতেই সেখানে জড়ো হতে থাকেন ইউনের সমর্থকরা। ভোরবেলা তাকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ইউনের সমর্থকদের খানিক ধস্তাধস্তিও হয়। তবে বড় কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি।
গত ৩ ডিসেম্বর রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন ইউন। তার এ ঘোষণায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়।পরে প্রবল বিরোধিতার মুখে সামরিক আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট।কিন্তু তার এই পদক্ষেপে দক্ষিণ কোরিয়া কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে। গণতান্ত্রিক সাফল্যের গাথা রচনাকারী দক্ষিণ কোরিয়ার অর্জিত সুনাম নষ্ট হওয়ার হুমকি তৈরি হয়। বিরোধী দলের অভিশংসন প্রস্তাবের মুখে পড়েন ইউন।প্রথম দফা অভিশংসনের পর গত ১৪ ডিসেম্বর ইউনকে বরখাস্ত করেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। তবে দায়িত্ব ও ক্ষমতা হারালেও জটিল আইনি প্রক্রিয়ার কারণে এখনও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে আছেন ইয়ুন সুক ইয়োল।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন